কক্সবাজার সংবাদদাতা: কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা হত্যা মামলার তিন স্বাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় র্যাব। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাক্ষীর পরিবারকে জোর করে থানায় নিয়ে গিয়ে সাদা কাগজে দস্তখত পরক্ষণেই মামলা দায়ের করেন টেকনাফ থানার নবনিযুক্ত ওসি আবুল ফয়সাল। গত মঙ্গলবার ১০ আগস্ট দুপুরে টেকনাফ বাহারছড়া এলাকা থেকে নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোঃ আয়াছকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সিনহা নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় স্বাক্ষী দেখানো হয় নুরুল আমিন, নিজাম ও মোঃ আয়াছকে। কিন্তু গণমাধ্যমকে তারা জানান সিনহা হত্যার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না চোখেও দেখেননি এমনিকি কানেও শুনেননি। তবুও ওসি প্রদীপ বাধ্য করে ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে স্বাক্ষী বানান তাদেরকে। ঘটনার সত্যাতা যাচাই করতে গত ১০ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে নিয়ে যায় র্যাব।গত মঙ্গলবার ১১ আগস্ট কক্সবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে গত বুধবার ১২ আগস্ট রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
নিজাম উদ্দিন নাজুর স্ত্রী শাহেদা বেগম গণমাধ্যমে জানান, স্বামীকে নিয়ে যাওযার পরে টেকনাফ থানার এক দল পুলিশ রাত ২টা ৩০ মিনিটে সময় স্থানীয় মেম্বার নিয়ে লাথি মেরে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। স্ত্রী শাহেদা বেগম কে স্বামীর অপহরণের কথা জানিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করেন । শাহেদা থানায় যেতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ফিরে যান পুলিশ সদস্যরা। পুনরায় রাত তিনটায় এসে নোটিশের কথা বলে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে চলে যায়।
নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগম জানান, তার ছেলেকে সাদা পোশাকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ভোর রাতে পুলিশ এসে ওসির কথা বলে টেনে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে দুইটি সাদা কাগজে টিপ সই নেন পুলিশ।তখন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন যে তুর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে যদি তুর ছেলেকে জীবিত অবস্থায় দেখতে চাস তাহলে মামলা কর, আর যদি মামলা না করলে তুর ছেলের লাশ দেখবি বলে হুমকি দেয় নবনিযুক্ত ওসি ফয়সাল।
পরবর্তীতে সাদা পোশাকে তিন স্বাক্ষীকে অপরহণ করা হয়েছে দেখিয়ে অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে মামলার এজহারে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করাই সদ্য যোগ দেওয়া টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল ফয়সাল।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পুলিশ সুপারের বারবার যোগাযোগ করতে চাইলে ফোন দেওয়ার পরেও কোন প্রকার তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।